নিউজ সোনারগাঁ২৪ডটকম:
একটি রপ্তানিমুখী গার্মেন্ট কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার বিসিক শিল্পনগরী এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। ওই সময়ে শ্রমিকদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষে ওসিসহ অর্ধশতাধিক আহত হয়েছে। ভাঙচুর করা হয়েছে বিসিকের অন্তত ২০ থেকে ২৫টি শিল্পকারখানা।
সোমবার ( ৩ ডিসেম্বর) দুপুরে শুরু হয়ে বিকাল পর্যন্ত দফায় দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বিকালে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। ঘটনার পরে বিসিক শিল্প এলাকার প্রায় সবগুলো গার্মেন্ট বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের সময় শিল্প পুলিশের সহকারি পুলিশ সুপার, ফতুল্লা থানার ওসি মঞ্জুর কাদের ও ৭ থেকে ৮জন পুলিশ সদস্য সহ প্রায় অর্ধশত সাধারণ শ্রমিক আহত হয়। এসময় পুলিশ উত্তেজিত হয়ে লাঠিচার্জ শুরু করলে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
এদিকে সংঘর্ষের ঘটনার কারণে বিসিক সংলগ্ন নারায়ণগঞ্জ-মুন্সিগঞ্জ সড়কে প্রায় দুই ঘন্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। এ ঘটনার পর বিসিক শিল্প নগরীতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি মঞ্জুর কাদের জানান, কয়েকদিন ধরেই ওই গার্মেন্টে শ্রমিকদের সাথে মালিক পক্ষের উৎপাদন মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরেই উত্তেজনা ছিল। আজ (সোমবার) শ্রমিকদের দাবি না মেনে তাদেরকে ছুটি প্রদান করায় শ্রমিকেরা বিক্ষুদ্ধ হয়ে গার্মেন্টস ভাঙচুর করে ও বিক্ষোভ মিছিল শুরু করলে পুলিশ তাদের নিভৃত করার চেষ্টা করে। এতে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে আমিসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হই।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদ নবী জানান, আমরা তাদেরকে নিভৃত করার চেষ্টা করলেও তারা আমাদের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে আমরা তাদের লাঠিচার্জ করে সরিয়ে দেই। ক্ষয়ক্ষতি ও আহতদের সঠিক সংখ্যা পরে জানানো যাবে।
পুলিশ ও শিল্প মালিকেরা জানান, উৎপাদন মজুরি বৃদ্ধি নিয়ে ফকির অ্যাপারেলস কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে গত তিনদিন ধরে শ্রমিক অসন্তোষ চলছিল। মালিকপক্ষ মজুরি বৃদ্ধি করলেও দাবী অনুযায়ী বৃদ্ধি না হওয়ায় শ্রমিকেরা রোববার কারখানাটির ভেতরে বিক্ষোভ করে। এ অসন্তোষ নিরসনে কারখানাটির মালিকপক্ষ সোমবার সকালে বিসিক কর্তৃপক্ষ, বিকেএমইএ কর্তৃপক্ষ ও শ্রম অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের নিয়ে আলোচনায় বসেন। তারা মঙ্গলবার বিভিন্ন কারাখানার মালিকদের সাথে আলোচনা করে তাদের সাথে উৎপাদন মজুরি সমন্বয় করার আশ্বাস দিলেও শ্রমিকরা তা না মেনে আবারও বিসিকের অভ্যন্তরে বিক্ষোভ শুরু করে। পরে এ বিক্ষোভ পুরো বিসিকে ছড়িয়ে পড়ে।
এসময় তারা বিসিক সহ আশপাশের ২০ থেকে ২৫টি কারখানায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। শিল্প মালিকদের কয়েকটি ব্যক্তিগত গাড়িও তারা ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে শিল্প ও ফতুল্লা থানা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সহ বিপুল সংখ্যক পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।